নারীদের জীবনে হয়তো এমন একটিও দিন নেই, যেদিন রাস্তাঘাটে, বাসে, বা ভিড়ের মাঝে তাদের হয়রানির মুখে পড়তে হয়নি। বয়স, পোশাক—কোনও কিছুর সঙ্গেই এর যোগ নেই।
এমনই এক ভয়ঙ্কর যৌন হেনস্থার স্মৃতির কথা শেয়ার করলেন অভিনেত্রী গৌতমী কাপুর। ‘স্পেশ্যাল অপস’-এর তৃতীয় সিজনের সাফল্যে এখন কেরিয়ারের শিখরে গৌতমী। তবুও স্কুলজীবনের সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি আজও রয়ে গেছে বুকে—অবচেতনের এক গভীর, না মোছা দাগ হয়ে।
গৌতমীর কথায়, “আমি তখন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। একদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে বাসে দাঁড়িয়ে আছি, হঠাৎ পেছন থেকে এক লোক আমার প্যান্টের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দিল। আমি এতটাই ছোট ছিলাম, কয়েক মিনিট লেগে গেল বুঝতে আসলে কী হয়েছে! ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে নেমে পড়ি বাস থেকে—মাথায় তখন শুধু একটা চিন্তা, ওই লোকটা কি আমার পেছন পেছন চলে আসবে না তো?”
ভয়টা শুধু ওই নোংরা লোকের জন্য নয়, বাড়িতে মায়ের প্রতিক্রিয়া নিয়েও ছিল আতঙ্ক। “ভাবছিলাম মা রাগ করবে কি না… কিন্তু মা আমার মুখের ভাব দেখেই জিজ্ঞেস করল, কী হয়েছে। তখন সব খুলে বললাম। শুনে মা বলল—ওই মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়িয়ে এক চড় মারতে হবে।
গৌতমীর মায়ের শেখানো লড়াইয়ের মন্ত্র স্পষ্ট—মেয়ে হয়েছে তো কী? এরকম পরিস্থিতিতে কখনও চুপ থাকবে না। “হাত চেপে ধরো, জোরে চিৎকার করো। প্রয়োজনে পেপার স্প্রে ব্যবহার করো, না হলে জুতো দিয়েও মারো।”
এর আগেও গৌতমীর ঠাকুমা এক ট্রোলকে সপাটে জবাব দিয়েছিলেন, যখন সে মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতার জন্য বিকিনি পরা নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিল।
আজ অভিনেত্রী, রাম কাপুরের স্ত্রী, সফলতার পাশাপাশি সাহস আর আত্মবিশ্বাসের প্রতীকও বটে। নিজের শৈশবের সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা শেয়ার করে গৌতমী যেন সব মেয়েদের উদ্দেশে এক শক্তির বার্তা দিলেন—হয়রানি সহ্য নয়, প্রতিরোধই একমাত্র উত্তর।