ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ থামানো না গেলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে কয়েক লাখ নাগরিককে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে জো বাইডেন প্রশাসন। সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা গণমাধ্যমটিকে জানান, ইসরায়েল ও এর পার্শ্ববর্তী দেশ লেবাননে বসবাসরত আমেরিকানদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে প্রাথমিকভাবে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যদিও এত নাগরিক সরানোর পদক্ষেপকে তারা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হিসেবে আখ্যা দেন। তবে এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘যে কোনো কিছুর জন্য প্রস্তুতি না রাখলে তা দায়িত্বজ্ঞানহীনতা হবে।’
৭ অক্টোবরের হামলার জবাবে হামাসের বিরুদ্ধে স্থল অভিযানের প্রস্তুতির বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। হামাসের ভয়াবহ ওই হামলার সময় ইসরায়েলে ৬ লাখ ও লেবাননে ৮৬ হাজার মার্কিন নাগরিক ছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
ওয়াশিংটন পোস্টকে মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা একটা বড় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। প্রশাসন এটা নিয়ে খু্বই চিন্তিত যে পরিস্থিতি ক্রমেই হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। ’
নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনের দুশ্চিন্তা শুধু দুই দেশে সীমাবদ্ধ নেই। পুরো আরব বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা মার্কিন নাগরিকরা অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি ঝুঁকিতে আছেন বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গত সপ্তাহে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্বব্যাপী সমস্ত নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি করে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ’বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা’ এবং ‘চলমান সহিংসতায়’ সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে, হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ আঞ্চলিক সংঘাতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমেরিকানদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য পরিকল্পনা চলছে।’
তবে মঙ্গলবার দেওয়া বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েল থেকে চার্টার ফ্লাইট পরিচালনা ছাড়া এ অঞ্চল থেকে আমেরিকানদের সরিয়ে নেওয়ার আর কোনো ‘সক্রিয় প্রচেষ্টা’ চলছে না।’
ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই তেল আবিবের পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অস্ত্র-অর্থ থেকে শুরু করে ইসরায়েলকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে ওয়াশিংটন।
তবে অধিকাংশ আমেরিকান নাগরিক ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠানোর বিরোধিতা করেছেন। এমনকি ৮৫ শতাংশ আমেরিকান মনে করেন, এই যুদ্ধের কারণে পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বৃহত্তর যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের করা এক জরিপে এই তথ্য উঠে আসে। ১৬ থেকে ১৯ অক্টোবর এই জরিপ পরিচালনা করেছে সংবাদমাধ্যমটি।