বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে অনিয়ম: মালয়েশিয়ায় দুই কর্মকর্তাকে অব্যাহতি

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় শনিবার, ২০ মে, ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশ ও নেপাল থেকে কর্মী নিয়োগে অনিয়মের ঘটনায় মালয়েশিয়ায় সংশ্লিষ্ট দফতরের শীর্ষ দুই কর্মকর্তাকে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় তাদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছে মালয়েশীয় সংবাদমাধ্যম ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে। খবরে বলা হয়েছে, শত শত কর্মী বৈধ পারমিট নিয়ে মালয়েশিয়ায় এসেছিলেন কিন্তু তারা চাকরির নিশ্চয়তা পাননি।

মালয়েশীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, মালয়েশিয়ায় বৈদেশিক শ্রম কোটা অনুমোদনের বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্তের পর মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডিজিসহ দুই শীর্ষ কর্মকর্তা অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে তাদের অন্য অফিসে বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক আসরি এবি রহমান এবং মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল অব অপারেশনস মুহাম্মদ খায়ের রাজমান মোহাম্মদ আনোয়ার। তাদেরকে মন্ত্রণালয়ে প্রজ্ঞাপন জারির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বদলি করা হবে।

মালয়েশিয়াকিনির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার তাদেরকে চলতি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে অন্যত্র বদলি করা হয়।

নতুন দায়িত্বে এসেছেন জাইনি উজাং। তিনি এসেই এসব বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। গত এপ্রিলে কয়েকশ বিদেশি শ্রমিক বৈধ কাগজপত্র নিয়ে মালয়েশিয়ায় গিয়েও কর্মহীন হয়ে পড়ে। মালয়েশিয়াকিনি মন্ত্রণালয়ের সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছে যে, এটি স্পষ্ট যে বিদেশি শ্রম কোটা অনুমোদনের বিষয়ে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অনুমোদন প্রক্রিয়ার যাচাই-বাছাই বাংলাদেশি এবং নেপালি শ্রমিকদের চিকিৎসার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। তারা মালয়েশিয়ায় আসার পর থেকে বেকারত্বের সম্মুখীন হন।’

মালয়েশিয়ায় কয়েকশ দক্ষিণ এশীয় কর্মী দাবি করেছেন যে, রিক্রুটিং এজেন্টরা অতিরিক্ত ফির বিনিময়ে চাকরির সুযোগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের প্রলুব্ধ করেছে।

এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশি কর্মী ও পর্যটকদের ভিসা দেওয়ার জন্য সাড়ে সাত কোটি টাকার বেশি ঘুষ নেওয়ার সন্দেহে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ ঢাকার হাইকমিশন থেকে দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে এবং রিমান্ডে নেয়।

মালয়েশিয়াকিনি প্রতিবেদনে অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে যে, জাইনির তদন্তে বেশ কয়েকজন নিম্নপদস্থ কর্মীর নামও উঠে এসেছে যারা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিলাম করেছিলেন এবং যারা আদেশ দিয়েছিলেন তাদের নাম জানাতে তারা এগিয়ে এসেছেন।

গত মঙ্গলবার শ্রম বিভাগের বরাত দিয়ে এক খবরে ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে জানায় যে, শ্রম বিভাগের হস্তক্ষেপে নতুন করে ১২০ জন ভুক্তভোগী বাংলাদেশি চাকরি পেয়েছেন। এসব বাংলাদেশি কর্মীদের ন্যূনতম মজুরি অনুযায়ী একটি নতুন সংস্থা এসব শ্রমিকদের কর্মী হিসেবে গ্রহণ করেছে বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সন্দেহজনক বিদেশি কর্মী কোটার অনুমোদন নিয়ে বেশ কিছু স্থানীয় এজেন্টের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে।

এই মাসের শুরুতে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী ভি শিবকুমার নিশ্চিত করেন যে, তার পাঁচজন কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি বলেছিলেন যে, মন্ত্রণালয় যাতে কার্যকরভাবে এবং সুষ্ঠুভাবে কাজ করে তা নিশ্চিত করার জন্য তাদের বরখাস্ত করা হয়েছিল।

গত মাসে মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন বিদেশি কর্মী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে শিবকুমারের তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে। ১৬ এপ্রিল শিবকুমারও এই বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে তার বিবৃতি দিয়েছেন।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com