মিনুর ‘বৈধ’ স্বামী তিনজন!

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ঢাকা : একাধিক নাম, একাধিক পরিচয়, এমনকি একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র। বিয়েও করেছেন একাধিকবার। তিনজন বৈধ স্বামীর পরিচয় পাওয়া গেলেও রয়েছে আরও অনেক স্বামী।

এমনই এক প্রতারক নারীর সন্ধান মিলেছে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে। বিয়ের নামে বহু পুরুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ-সম্পদ লুট, জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে নানামুখী প্রতারণা-জালিয়াতি ও নিরীহ লোকদের হয়রানিসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগে মিনু আক্তার ওরফে নাছমিন আক্তার সিমু ওরফে মোছাম্মৎ ফাতেমা খাতুন প্রকাশ ফাতেমা আক্তার রোমানা (৩৬ ) নামে এক নারীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। একাধিক প্রতিষ্ঠানে ছদ্দনাম এবং ভিন্ন ভিন্ন নামের সার্টিফিকেট ব্যবহার করে একাধিক চাকরিও করেছেন তিনি নির্বিঘ্নেই।

বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালতে এ মামলা করা হয়। মামলায় মিনু আক্তার ছাড়াও আসামি করা হয়েছে মোস্তফা জামিল (৩৭) ও রাশেদকে (৩৯)।

মামলার কাগজপত্র ও অভিযোগ পত্রের তথ্য বলছে, ২০০৮ সালে তৈরি করা একটি জাতীয় পরিচয়পত্রে দেখা যায় মোছা: ফাতেমা খাতুন (জাতীয় পরিচয়পত্র নং-১৯৮৯৮৮১২৭২৭১৭০৫২৪) নাম ধারণ করে এই মহিলা স্বামী হিসেবে জনৈক লুৎফর রহমান এবং মা হিসেবে শামসুন নাহারের নাম।

২০২০ সালের একটি জাতীয় পরিচয়পত্রে দেখা যায় একই মহিলার নাম নাছমিন আক্তার সিমু (জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ৩৭৬৪৬৬৭০৫৫), পিতার নাম মো. আলী আহাম্মদ ও মাতার নাম শামসুন নাহার।

অপর একটি নাগরিক সনদপত্রে দেখা যায় পিতা-মাতার নাম ঠিক রেখে একই মহিলার নাম উল্লেখ রয়েছে মিনু আক্তার। ওই মহিলাই আবার পিতা-মাতার নাম এবং নিজের ঠিকানা একই রেখে ঢাকার সাফা সোয়েটার লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন ফাতেমা আক্তার রোমানা নাম নিয়ে ভিন্ন সনদ দিয়ে।

২০০৮ সালের কোনো একসময়ে বিয়ে করেন টাঙ্গাইলের লুৎফর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে। সেই সংসারে একটি সন্তানও রয়েছে। ২০০৮ সালের একটি এনআইডি কার্ডে ওই স্বামী লুৎফুর রহমানের নাম। একই মহিলা মিনু আক্তার নাম ধারণ করে ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ইমাম হোসেন নামে এক প্রবাসীকে বিয়ে করেন।

কাতার প্রবাসী ঐ ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে বলবৎ থাকা অবস্থাতেই আবার ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় গিয়ে বিয়ে করেন মোস্তফা জামিল নামে এক ব্যক্তিকে। যেসব পুরুষদের সঙ্গে মিনু আক্তারের বিয়ে হয়েছে তারা প্রত্যেকেই এখন রয়েছেন বিয়ে ভীতিতে।

ঢাকায় বিয়ে হওয়া মোস্তফা জামিলের পাশাপাশি চট্টগ্রামের আদালতে যিনি মামলা করেছেন ওই মহিলার বিরুদ্ধে সেই ইমাম হোসেনও বিয়ে আতংকের পাশাপাশি মিথ্যা মামলার আতংকে আছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলার বাদী প্রবাসী ইমাম হোসেনের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, মিনু আক্তারের বহু এনআইডি কার্ড এবং বিভিন্ন নামে নাগরিক সনদ বানিয়ে বৈবাহিক প্রতারণাসহ ফেসবুক, ইমো, হোয়াটস অ্যাপে বিভিন্ন নামে অ্যাকাউন্ট খুলে দেশি ও প্রবাসীদের সঙ্গে ভিন্ন ধরনের প্রতারণা করেছে।

এক নারীর অন্তত ৪টি ভিন্ন নামের পরিচয়পত্র, তিনজন বৈধ স্বামী, বৈবাহিক সম্পর্ক বলবৎ থাকা অবস্থায় অন্য পুরুষকে বিয়ের ডকুমেন্ট বিজ্ঞ আদালতের নজরে আনার জন্য ফিরিস্তি আকারে সাবমিট করা হয়েছিল।

একাধিক প্রতিষ্ঠানে ছদ্মনাম এবং ভিন্ন ভিন্ন নামের সার্টিফিকেট ব্যবহার করে একাধিক চাকরিও করেছেন মিনু আক্তার নির্বিঘ্নেই। আদালতে মিনু আক্তারসহ এ চক্রের তিন সদস্যের নামে মামলা করা হয়েছে। মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য বায়েজিদ বোস্তামি থানাকে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com