চট্টগ্রাম : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পণ্যের মূল্য কমায় বিএনপির অস্বস্তি বেড়ে গেছে। তারা সেজন্য বাম-ভাইদেরকে দিয়ে হরতাল ডেকেছে। কিন্তু হরতালে ঢাকা শহরে প্রচন্ড ট্রাফিক জ্যাম ছিল।

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দুপুর আড়াইটায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্বল্পমূল্যে পণ্য বিক্রির জন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা টিসিবির মাধ্যমে এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড দিয়েছেন। এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড মানে পাঁচ কোটি মানুষ। এ কারণে বাজারে পণ্যের মূল্য কমে গেছে। এতে জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। কিন্তু অস্বস্তি বেড়ে গেছে বিএনপির।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা বাম-ভাইদের দিয়ে হরতাল ডাকালো। হরতাল ডেকে জাফর উল্লাহ সাহেব নিজে স্বপরিবারে লন্ডন চলে গেলেন। আর বাম ভাইদের হরতালের সময় গতকাল ঢাকা শহরে প্রচন্ড ট্রাফিক জ্যাম ছিল। বাম ভাইদের আমি সম্মান করি, কারণ তারা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। কিন্তু তারা কেনো হরতাল করে জনগণের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি করলেন সেটিই আমার প্রশ্ন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বিএনপির কাজ জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো। পণ্যের মূল্য নিয়েও বিএনপি সারাদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ যখন শুরু হয় তখন বিএনপি বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল। ছেলেধরা গুজব ছড়িয়েছিল। পদ্মা সেতু করতে পারবে না বলেছিল। আজকে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে এপার থেকে ওপারে গেছেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর কিছু কিছু পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়, তখন বিএনপি সারাদেশে নানা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে তারা দ্বিচারিতা নীতি অবলম্বন করে। একদিকে মজুদদার ও অসাধু ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দিয়েছে পণ্য মজুদ করার জন্য এবং পণ্যের মূল্য বাড়ানোর জন্য, অন্যদিকে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য কর্মসূচি দিয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, পৃথিবীর ১৩০ দেশ যখন করোনার টিকা দেয়া শুরু করতে পারেনি, তখন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা টিকা দেয়া শুরু করলেন। করোনার প্রথম, ২য় এবং ৩য় ঢেউ তিনি যেভাবে মোকাবেলা করেছেন এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রশংসা করেছে। জাতিসংঘ প্রশংসা করেছে, পৃথিবীর নেতৃবৃন্দ প্রশংসা করছেন। কিন্তু বিএনপি প্রশংসা না করে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। তারা এই টিকা না নেওয়ার জন্য মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পরে নিজেরাই গোপনে টিকা নিয়েছে। লজ্জা শরম ভেঙে কেউ কেউ জনসম্মুখেও টিকা নিয়েছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, সারাদেশে প্রকৃতপক্ষে বিএনপিকে খুঁজে পাওয়া যায় না। বিএনপি আছে শুধু টেলিভিশনের পর্দায়। টেলিভিশনের সাংবাদিকরাই মূলত বিএনপিকে বাঁচিয়ে রেখেছে। বিএনপিকে টেলিভিশন ছাড়া কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। মাঝেমধ্যে দুয়েকটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবেশে আবার নিজেরা নিজেরা মারামারি করে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, কারও মেয়ে স্কুলে গেলে এখন তার কাছে মোবাইল ফোনে টাকা চলে আসে, এসব আগে ছিল না। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার যাদুকরী নেতৃত্বে এভাবে দেশ এগিয়ে গেছে। এই কথাগুলো জনগণের মাঝে আমাদের নেতাকর্মীদের মনে করিয়ে দিতে হবে, প্রচার করতে হবে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ এখন শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য সারাদেশে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব বেরিয়ে আসছে। এতে আগামী নির্বাচনে আমরা আবারও ২০০৮ সালের মতো ধস নামানো বিজয় নিশ্চিত করবো।