যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও রুশ সেনাদের গোলাবর্ষণ অব্যাহত

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় শনিবার, ৫ মার্চ, ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনের সমুদ্র-তীরবর্তী শহর মারিউপোল ও ভোলনোভখার বেসামরিক লোকজনকে সরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও রুশ সৈন্যরা তা পুরোপুরি মানছে না। যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সদস্যরা শনিবার মারিউপোলে এখনও গোলাবর্ষণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন শহরটির ডেপুটি মেয়র সেরহি ওরলভ।

টেলিগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় মারিউপোলের সিটি কাউন্সিল বলেছে, জাপোরিজিয়া অঞ্চলেও লড়াই চলছে। অথচ মারিউপোল থেকে মানবিক করিডোর ব্যবহার করে বেসামরিক লোকজনকে এই শহরে সরিয়ে নেওয়া হবে।

লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার পথ বরাবর ‘অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি’ নিশ্চিত করতে রাশিয়ান পক্ষের সাথে আলোচনা চলছে বলে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। মেয়র সেরহি ওরলভ বিবিসিকে বলেছেন, ‘রাশিয়ানরা আমাদের লক্ষ্য করে বোমা বর্ষণ এবং গোলাবারুদ নিক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। এটি একেবারে পাগলামি।

তিনি বলেন, মারিউপোলে কোনো যুদ্ধবিরতি নেই। লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার পথজুড়েও যুদ্ধবিরতি দেখা যাচ্ছে না। আমাদের বেসামরিক লোকজনও চলে যেতে প্রস্তুত। কিন্তু গোলাগুলির মুখে তারা পালাতে পারছে না।

মারিউপোলের একজন বাসিন্দা যিনি এই নগরীর কেন্দ্রে বসবাস করেন; তিনি বিবিসিকে বলেছেন, স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শহরে এখনও গোলাগুলির শব্দ অব্যাহত রয়েছে।

৪৪ বছর বয়সী প্রকৌশলী আলেকজান্ডার বলেন, এই মুহূর্তে আমি মারিউপোলে রয়েছি। আমি এখন মারিউপোলের সড়কে রয়েছি। আমি প্রত্যেক তিন থেকে পাঁচ মিনিট অন্তর গোলাবর্ষণের শব্দ শুনতে পাচ্ছি।

তিনি বলেন, ‘সবুজ করিডোরটি একেবারে অর্থহীন। আমি এমন লোকজনের গাড়ি দেখতে পাচ্ছি, যারা পালানোর চেষ্টা করেছিল এবং তারা বর্তমানে শহরে ফিরে আসছে।’

গত ৯ দিনের রুশ অভিযানে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্শিতী রাষ্ট্র পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১০ লাখ ইউক্রেনীয়। এছাড়াও শতাধিক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে আছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশুও।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তারা অবশ্য সংলাপ শুরু করেছেন। সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্র বেলারুশের উদ্যোগে দেশটির ইউক্রেন সীমান্তবর্তী শহর গোমেলে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফা বৈঠক হয় দুই দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে।

তার পর দ্বিতীয় দফা বৈঠক হয় বৃহস্পতিবার। প্রথম বৈঠকে কোন কোন বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল স্পষ্টভাবে জানা না গেলেও দ্বিতীয় দফার বৈঠকে তিনটি পয়েন্টের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়…

১.অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি

২. অস্ত্রবিরতি

৩. অবিরাম গোলাবর্ষণে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহর এবং গ্রাম থেকে বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য মানবিক করিডোর চালু।

এসবের মধ্যে তৃতীয় পয়েন্ট অর্থাৎ অবিরাম গোলাবর্ষণে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহর এবং গ্রাম থেকে বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য মানবিক করিডোর চালুর ব্যাপারে রুশ ও ইউক্রেন প্রতিনিধিদল ঐকমত্যে পৌঁছেছেন বলে বৃহস্পতিবারই জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com