সব সরকারি চাকরিজীবীর সম্পদের হিসাব নেবে সরকার

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সম্পদের হিসাব দিতে হবে সব সরকারি চাকরিজীবীকে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রবিবার (০১ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি হতে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সব সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে হবে। এখন কী পদ্ধতিতে কীভাবে জমা দেবে সে বিষয়ে আমরা ফরম্যাট রেডি করে দেবো।

পাঁচ বছর পরপর সরকারি কর্মচারীর নিজ সম্পদ বিবরণী নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়ার কথা। তবে চাকরির সেই আচরণবিধি আদতে মানছেন না তেমন কেউ। সম্পদের হিসাব দিতে সরকারি চাকরিজীবীর তেমন হেলদোল নেই। তাদের নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দফতর, সংস্থারও হিসাব নেওয়ার ব্যাপারে নেই গরজ।

দু’পক্ষের অনীহায় হিসাব দেওয়ার বিষয়টি অনেকটাই ‘কাগুজে নিয়ম’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে দু-একটি তাদের অধীন কর্মকর্তাদের দায়সারা হিসাব নেয় বটে, কিন্তু সেগুলো খতিয়ে দেখা হয় না। কারও অস্বাভাবিক সম্পদ বেড়ে গেলেও ব্যবস্থা নেওয়ার নজির নেই। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এক মাসের মধ্যেই এ বিষয়ে কাজ শুরু হলো।

সদ্য সাবেক সরকারের মন্ত্রী এমপি, সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ ও এনবিআর থেকে বদলি হওয়া কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর থেকে সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাবের বিষয়টি ফের সামনে এসেছে। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে সার্বিকভাবে দুর্নীতি বেড়েছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)।

বার্লিনভিত্তিক এ সংস্থাটি গত বছর দুর্নীতির যে ধারণা সূচক প্রকাশ করে, সেখানে আগের বছরের চেয়ে দুই ধাপ নিচে নামে বাংলাদেশ। সূচক অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন দশম।

জানা গেছে, পাঁচ বছর পরপর সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান ১৯৭৯ সালে চালু হয়। দেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারী আছেন। চাকরিজীবীর জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আচরণ বিধিমালায় এ নিয়ম যুক্ত করা হয়। তবে চার দশকের বেশি সময় ধরে এ নিয়ম পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি। অতীতে দেখা গেছে, বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি মন্ত্রণালয় তাদের অধীন কর্মচারীর কাছে সম্পদের বিবরণী চেয়েও তেমন সাড়া পায়নি।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. ফিরোজ মিয়া বলেন, নিয়ম অনুসারে প্রতি পাঁচ বছর পর ডিসেম্বরে সরকারি কর্মচারী তাদের সম্পদের হিসাব জমা দেবেন। আগে তা প্রতিবছর দেওয়ার নিয়ম ছিল। এখন পাঁচ বছরেও অনেকে তা দিতে চান না। আচরণবিধি না মানলে তা অসদাচরণ। তাই সম্পদের হিসাব না দিলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা উচিত। এতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা ভীত হবেন এবং দুর্নীতি পুরোপুরি বন্ধ না হলেও নিয়ন্ত্রণে আসবে।

আচরণ বিধিমালা অনুসারে, নিজ নিজ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার কথা। সরকারি চাকরিতে ক্যাডার রয়েছে ২৬টি। এসব ক্যাডার কর্মকর্তা তাদের নিজ নিজ মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করেন। সম্পদের হিসাবও নিজ নিজ মন্ত্রণালয়েই দেওয়ার কথা। ক্যাডার কর্মকর্তার বাইরেও সরকারের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বিপুলসংখ্যক নন-ক্যাডার কর্মকর্তা রয়েছেন।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com