অর্থ আত্মসাতে ‘ফাঁসছেন’ মেজর মান্নান, দুদকের মামলা

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২

ঢাকা:বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফসি) সাবেক চেয়ারম্যান মেজর (অব) এম এ মান্নানসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তিনি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্প ধারার বাংলাদেশের মহাসচিব।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) মেজর (অব.) মান্নানসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এর উপ-পরিচালক আবদুল মাজেদ মামলাটি দায়ের করেন। 

দুর্নীতি দমন কমিশনের জনসংযোগ বিভাগ থেকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

মামলায় বলা হয়েছে, নিরাপত্তা জামানত ও মর্টগেজ ছাড়াই মেজর মান্নানসহ অন্য আসামিরা বিআইএফসি থেকে ৮ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়েছেন। পরবর্তীতে এই ঋণের বিপরীতে সুদ ও আসলসহ গ্রাহকের কাছে পাওনা ৮ কোটি ৩৮ লাখ ৮১ হাজার ৭০৫ টাকা স্থানান্তর ও রূপান্তর করেন আসামিরা।

এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফসি) সাবেক চেয়ারম্যান মেজর (অব.) এম এ মান্নান ও তার প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও কর্মকর্তারা পরস্পর যোগসাজসে, একে অন্যের সহায়তায় প্রতারণামূলকভাবে মেসার্স টেলিকম সার্ভিসেস লিমিটেডের মালিক মো. আমিনুর রহামানের নামে নিরাপত্তা জামানত ও মর্টগেজ ছাড়া ঋণ দিয়েছেন। পরে যা সুদে আসলে ৮ কোটি ৩৮ কোটি ৮১ হাজার ৭০৫ টাকা হয়। সেই টাকা মেজর (অব.) মান্নানসহ অন্যরা স্থানান্তর ও রূপান্তর করেন।

কোন কোন ধারায় মামলা হয়েছে তা উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, তারা এই টাকা স্থানান্তর ও রূপান্তর ঘটিয়ে আত্মসাতপূর্বক দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা, ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ধারায় অপরাধ করায় কমিশন তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর অনুমোদন দেয়। রোববার (১৮ ডিসেম্বর) মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

কীভাবে ঋণ দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাত করা হয়েছে তা উল্লেখ করে এজহারে বলা হয়, মেসার্স টেলিকম সার্ভিস লিমিটেডের মালিক মো. আমিনুর রহমান তার স্বাক্ষরে ২০১১ সালের ৮ ডিসেম্বর বিআইএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাছে ৬০ মাসের জন্য ব্যবসায়িক প্রয়োজন মেটাতে ৮ কোটি টাকা ঋণ চেয়ে আবেদন করেন। 

সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থাপনা কমিটি ১৫ শতাংশ সুদে ৬০ মাসের জন্য এই ঋণের প্রস্তাব বোর্ডে উত্থাপন করে। জামানত হিসেবে প্রত্যেকটি ঋণের বিপরীতে ৬০ পোস্টডেটেড ও ১টি করে তারিখবিহীন স্বাক্ষরিত চেক জমা রাখার কথা বলা হয়। কিন্তু নিরাপত্তা জামানত হিসেবে চেক কিংবা অন্য কোনো সম্পদ মর্টগেজ নেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, তাদের আবেদনকারীর সিআইবি রিপোর্টও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করা হয়নি। কিন্তু এরমধ্যেই পরিচালনা পর্ষদের সভায় ৬০ মেয়াদের ৮ কোটি টাকা ঋণ প্রদানের বিষয় অনুমোদন দেয়া হয়।

মেজর (অব.) মান্নান ছাড়াও এই মামলার বাকি ১১ আসামিরা হলেন, ঋণ গ্রহীতা মো. আমিনুর রহমান, বিআইএফসির পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক আব্বাস উদ্দিন আহমেদ, এ এন এম জাহাঙ্গীর আলম, রইস উদ্দিন আহমেদ, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ, রোকো ফেরদৌস, বিআইএফসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহমুদ মাণিক, বিআইএফসির সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ইনামুর রহমান, বিআইএফসির সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব বিজনেস সৈয়দ ফকরে ফয়সাল, বিআইএফসির সাবেক এভিপি অ্যান্ড ইউনিট হেড আহমেদ করিম চৌধুরী এবং সাবেক সিনিয়র অফিসার বিজনেস মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন।

এব্যাপারে জানতে চেয়ে মেজর মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানির লিমিটেড থেকে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত পাঁচটি মামলা দায়ের করেছে দুদক। যার মধ্যে দুইটি মামলা চার্জশিট দেওয়া হয়েছে, বাকি তিনটি মামলা এখনও তদন্ত করছে দুদক। এসব মামলায় মোট ৮৫ কোটি ২০ লাখ ৮৮ হাজার ১৪ টাকা আত্মসাত হয়েছে বলে জানায় দুদক।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com