ঢাকা: একের পর এক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীদের হাতে চলে যাওয়ায় এবার মিয়ানমারের প্রশাসনিক রাজধানী ন্যাপিড হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা করছে জান্তা সরকার। ফলে শেষ রক্ষায় শহরটিতে ১৪ হাজার সেনা মোতায়েন করতে হচ্ছে। এরই মধ্যে এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ৪ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। অন্যদের পাঠানোর কার্যক্রম চলছে। ওদিকে, রাখাইন রাজ্য থেকে ১০০ বন্দিকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আরাকান আর্মি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইরাবতী। নগরীর বাসিন্দা, সরকারি কর্মচারী ও সামরিক সূত্র জানায়, গোপনে অন্য অঞ্চল থেকে হাজার হাজার সেনা ফিরিয়ে নিচ্ছে সামরিক জান্তা। গত ২৭শে অক্টোবর উত্তর শান রাজ্যে ‘অপারেশন-১০২৭’ শুরুর পর শহর, ফাঁড়ি, সেনা, অস্ত্র ও গোলাবারুদ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার পরপরই এই প্রস্তুতি শুরু হয়। এরই মধ্যে রাজধানীর দিকে এগোতে শুরু করেছে বিদ্রোহীরা। তীব্র লড়াই হয়েছে ন্যাপিড থেকে মাত্র ১৯৪ কিলোমিটার দূরের কায়াহ রাজ্যের রাজধানী লোইকাওয়ে।
ফলে দ্রুতই কেন্দ্রকে শক্তিশালী করতে সেনা জড়ো করতে যাচ্ছে জান্তা সরকার। সূত্র জানিয়েছে, সরকার মান্দালয়, বাগো এবং ইয়াঙ্গুন অঞ্চল থেকে প্রায় ১০ হাজার সেনাকে রাজধানীতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ঘাঁটিতে স্থানান্তর করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই অঞ্চলের ঘাঁটি থেকে প্রায় ৪ হাজার কমান্ডো এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের দিকে প্রশাসনিক রাজধানীতে ফের মোতায়েন শুরু করা হয়। মান্দালয়ের তাদা-ইউ শহরের পদাতিক ব্যাটালিয়ন কমান্ডো ইউনিটের সূত্রের বরাত দিয়ে সাবেক সৈনিক ইউ লুইন বলেন, ড্রোন হামলা হলেও যাতে ক্ষয়ক্ষতি না হয়, সেজন্য কমান্ডোদের নতুন ব্যারাকের ছাদ ইস্পাত এইচ বিম দিয়ে মজবুত করা হচ্ছে।
ন্যাপিডতে নির্মিত হচ্ছে অন্তত ৭০টি নতুন ব্যারাক। বিভিন্ন এলাকায় গোপনে বাঙ্কার তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে সামরিক বাহিনী ও পুলিশ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, থানাগুলোকে জরুরি পরিস্থিতিতে প্রতিরক্ষা ফাঁড়ি হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই সময়ে পুলিশ তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম যেমন, ফৌজদারি মামলার তদন্ত, অপরাধী ধরা থেকে শুরু করে অন্যান্য কাজ করবে না। প্রতিরক্ষায় কাজ করবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের বাকি অংশে সামরিক শাসন কতোটা হুমকির মুখে পড়তে পারে, তা শিগগিরই পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে, বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ভারী অস্ত্র, বিমান, কামানও ব্যবহার করতে পারে সামরিক বাহিনী।