আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে অধিকৃত গাজা উপত্যকা। আল জাজিরা বলছে, অন্তত ১ হাজার ফিলিস্তিনি ইসরায়েলে প্রবেশ করেছে। বেশ কিছু ইসরায়েলি সেনাকে আটক করেছে হামাস। এ পরিস্থিতিতে ইসরায়েলে ৪৮ ঘণ্টার জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
হামাসের রকেট হামলায় এ পর্যন্ত তিনশ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। আর আহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি। ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৩২ ফিলিস্তিনি, আহতের সংখ্যা প্রায় ১৮শ।
অধিকৃত পশ্চিম তীরের প্রায় সব এলাকায়, এক বছরের বেশি সময় ধরে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই সময়ে সশস্ত্র গোষ্ঠী দমনের নামে নির্বিচার হামলায় প্রাণ হারান অনেক বেসামরিক ফিলিস্তিনি।
এমন পরিস্থিতিতে শনিবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অপারেশন আল আকসা ফ্লাড শুরু করে হামাস। আল আকসা মসজিদকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের উস্কানি এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি নির্যাতনের জবাবে, গাজা থেকে ছোঁড়া হয় সাত হাজার রকেট। আকাশ পথ ছাড়াও হামলা চালানো হয় নৌ এবং স্থল পথে।
সেডরোটের পুলিশ স্টেশনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করে হামাস। এক ভিডিওতে গাজায় ইসরায়েলি সাঁজোয়া যানের দখল নিতে দেখা যায় ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীদের।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, অনেক ইসরায়েলি সেনা ও বেসামরিক নাগরিককে জিম্মি করে রেখেছে হামাস। আর হামাস জানিয়েছে, সংঘর্ষের জেরে যে কোনো খারাপ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত তারা।
হামাসের হামলার জবাবে তাদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গুড়িয়ে দেয় গাজা শহরের বহুতল ভবন। চলমান এ পরিস্থিতিকে যুদ্ধাবস্থা উল্লেখ করে, কড়া জবাব দেওয়ার ঘোষণা দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ‘কোনো অভিযান বা মহড়া নয়, আমরা যুদ্ধে আছি। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আশ্চর্যজনক আক্রমণ চালিয়েছে হামাস। অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসীদের হটাতে কাজ করছে সেনাবাহিনী। শত্রুদের যে মূল্য দিতে হবে তা তাদের ধারণার বাইরে।’
বরাবরের মতো ফিলিস্তিনিদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে ইরান। আর যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইসরায়েলে হামাসের হামলার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইউরোপিয় কমিশন। নেতানিয়াহুকে ফোন করে পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন বাইডেন। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনের সস্ত্রাসী সংগঠন হামাস দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়েছে ইসরায়েলের জনগণ। এই অবস্থায় ইসরায়েলের পাশে যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে। আমরা কখনোই সন্ত্রাসীদের সফল হতে দেব না। ইসরায়েলের নাগরিকদের সর্বাত্মক সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।’
ইসরায়েলকে সমথর্ন জানিয়েছে ভারতও। সরাসরি কোনো পক্ষ না নিলেও, সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া ও তুরস্ক।
২০০৭ সালে হামাস গাজার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে, উপত্যকাটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। সে সময় থেকে বেশ কয়েকবার বড় লড়াই হয়েছে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে।